টংগিবাড়ী উপজেলা মুন্সীগঞ্জ জেলার একটি প্রাচীন উপজেলা। পদ্মা,ধরেশ্বরী ও ইছামতি নদী বিধৌত টংগিবাড়ী উপজেলার আয়তন ১৯৪.৯৬ বর্গ কিলোমিটার এবং লোকসংখ্যা ১,৮৯,৫৮০ জন । ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে এখানে থানা সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে টংগিবাড়ী থানা উপজেলায় উন্নীত হয়। এলাকাটি ছিল তুলনামূলক ভাবে নিচু ভূমি। এলাকার বৃহদংশ সারা বছর পানির নিচে ডুবে থাকতো। বর্ষাকালে প্রায় পুরো এলাকা পানির নিচে চলে যেতো। এ অবস্থায় লোকজন মাটি উচু করে বসত বাড়ী নির্মান করতো।কিন্তু পর্যাপ্ত মাটি পাওয়া যেত না। তাই ছোট এক টুকরো জমি মাটি দিয়ে ভরাটপূর্বক উচু করে বাশ,কাঠ,খড় ইত্যাদি দিয়ে ছোট্র বাড়ি করে থাকতো। এ রকম ছোট ঘর স্থানীয়ভাবে টং নামে পরিচিত ছিল। এলাকার অধিকাংশ বাড়ি ছিল টং। তাই টং বাড়ি হতে এলাকাটির নাম হয় টংগিবাড়ী।আবার অনেকে মনে করেন এখানে একটি জল টুঙ্গির ছিল। মেয়েরা এ জলটুঙ্গিতে স্নান করতো। জলটুঙ্গি যে বাড়ি বা গ্রামে বা গ্রামে অবস্থিত ছিল সে বাড়ি তথা গ্রামটি টুঙ্গীবাড়ি নামে পরিচিত ছিল।পরবর্তীকালে যার নাম হয় টুঙ্গিবাড়ি। যার অপভ্রাংশ টঙ্গিবাড়ি। জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত কষ্টি পাথরের মূর্তি,প্রাচীন মঠ ও কালিবাড়ি টংগিবাড়ী উপজেলার প্রাচীন নিদর্শন। অতীশ দীপঙ্কর এর মতো বিখ্যাত ব্যক্তির জন্মস্থান এই টংগিবাড়ী। বেশ কিছু মানুষ ব্যবসা বানিজ্যের কাজে দেশে ও দেশের বাহিরে অবস্থান করে। এখানকার মানুষের মূল পেশা কৃষি। কৃষকরা মূলত আলুর চাষ করে এখানে। এই আলু দেশের আভ্যন্তরিন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা হয়।এখানে ২৪টি কোল্ড ষ্টোরেজ আছে। এতে আলু সংরক্ষন করে সারা বছরের খাদ্য চাহিদা পূরন করা হয়। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে এখানকার কৃষকরা।
সম্প্রতি টংগিবাড়ী উপজেলায় সোনারং টংগিবাড়ী ইউনিয়নের নাটেশ্বর গ্রামে প্রাচীন বোদ্ধ মন্দির পাওয়া গেছে।প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয় এই বোদ্ধ মন্দির দেখার জন্য।এটি নিয়ে এখনো গবেষনা চলছে।এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠলে টংগিবাড়ী আরো সমৃদ্ধশালী হবে বলে মনে করি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস